● নারায়নগঞ্জভিত্তিক ষ্টিল প্ল্যান্টটির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা তিনগুণেরও বেশিতে নিয়ে বছরে ২১৬,০০০ টন এম এস রডে উন্নীত করা।
● ২০২২ সালে আল-ফালাহ্ ষ্টিল অধিগ্রহণ করে এসএস ষ্টিল এবং তারা এ পর্য্ন্ত বিনিয়োগ করেছে ১৮৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বিএন রিপোর্ট
এসএস ষ্টিল লিমিটেডের সিষ্টার কনসার্ন আল-ফালাহ্-ষ্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলস লিমিটেড বাজারে ক্রমবর্ধমান মানসম্পন্ন বিলেটের চাহিদার ওপর ভর করে আগামি দুই বছরের মধ্যে তাদের উৎপাদন তিনগুনেরও বেশি বাড়ানোর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে তাদের এম এস বিলেট উৎপাদন ক্ষমতা ৬৪,৮০০ টন থেকে ১৫১,২০০ টনে নিয়ে গেছে, যার পেছনে লক্ষ্য হলো ২০২৫ সালের মধ্যে বছরে ২১৬,০০০ টন সমন্বিত এম এস রড উৎপাদন করা।
দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান এসএস ষ্টিল লিমিটেড ষ্টিল উৎপাদন ও বিপননে যুক্ত। ২০২২ সালের মার্চে তারা একরকম বন্ধ হয়ে যাওয়া আল-ফালাহ্ ষ্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলস লিমিটেড অধিগ্রহণ করে। তখন কোম্পানিটির জমি ছিল মাত্র ৩৬০ ডেসিমেল এবং উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৬৪,৮০০ টন।
নারায়নগঞ্জভিত্তিক আল-ফালাহ্ ষ্টিলের ইক্যুইটি শেয়ার কিনে নেয়ার পর এসএস ষ্টিল প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগ করে প্রায় ১৮৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
এসএস ষ্টিলের পরিচালক এবং আল-ফালাহ্ ষ্টিলের মনোনীত পরিচালক সৈয়দ রেজারাজ আহমদ বলেন, “কোম্পানির উৎপাদন বাড়াতে বাৎসরিক ৮৬,৪০০ টন উৎপাদন ক্ষমতার একটি মেশিন আমরা আমদানি করেছি। মেশিনটি বসানোর জন্য আমরা ২৪০ ডেসিমেল জায়গা কিনেছি। আমরা বিদ্যুৎ-এর ব্যাবহারের পরিমাণ বাড়িয়েছি এবং ৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ লাইন বসিয়েছি।“
তিনি বলেন, আল-ফালাহ্ ষ্টিলে ২৫০ জনের ও বেশী কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এটি এখন উচ্চ মানের বিলেট তৈরি করছে এবং নিজস্ব স্বনামধন্য ব্র্যান্ড নামের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছে।
ষ্টিল প্ল্যান্টটি চালু করার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য কারখানাটি পরিদর্শনের ব্যবস্থা করেছে। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা ষ্টিল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের পুরো পদ্ধতিটি দেখেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সাজ্জাদ, কোম্পানি সচিব, এসএস ষ্টিল ও আল-ফালাহ্ ষ্টিল এবং শহীদ হোসেন তানজিল, এসএস ষ্টিলের চেয়ারম্যানের নির্বাহী সহকারী।
বাংলাদেশ ষ্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড এনটারপ্রেনারর্সের মতে, ১০ বছর আগেও দেশে বছরে মাত্র আড়াই লাখ টন এম এস রড উৎপাদন হতো। বর্তমান চাহিদা অনুসারে বছরে গড়ে প্রায় ৬০ লাখ টন রড উৎপাদন ও বিপনন হয়। যেভাবে ও যে গতিতে কারখানাগুলোর সক্ষমতা বাড়ছে তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ এটা এক কোটি টনে দাড়াবে।
বর্তমানে দেশে ৪০টি আধুনিক ও ১৫০টি সনাতন কারখানা ষ্টিল পণ্য তৈরি করছে। বর্তমানে দেশে মাথাপিছু ষ্টিল ব্যবহার ৪৫ কেজি। ২০৩০ সালে এটি ১০০ কেজিতে গিয়ে দাড়াবে বলে প্রত্যাশা।
দেশে নতুন নতুন মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রতিষ্ঠা এবং বৈদেশিক আয়ে গ্রামাঞ্চলে প্রবাসীদের বাড়ি নির্মানের কারণে ষ্টিলের চাহিদা বেড়েছে। এগুলোই দেশের ষ্টিল খাতের বিকাশের বড় কারণ।
ষ্টিল উৎপাদকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কারখানা আধুনিকীকরণ এবং কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোয় মনোযোগী। বেসরকারি খাতের বড় বিনিয়োগ আর পণ্যবহুমুীকরণের মাধ্যমে এই খাত ফুলে ফেঁপে উঠছে।
কাঁচামাল আর প্রযুক্তি চাহিদার কারণে বাংলাদেশে এশিয়ার অন্যতম বিকাশমান ষ্টিল মার্কেটে পরিণত হয়েছে।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন আর অন্যান্য কাজে ষ্টিল গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ক্রেতার চাহিদা অনুসারে নানা ধরণের ষ্টিল পণ্য তৈরি করছে প্রতিষ্টানগুলো।